বুদ্ধিবৃত্তিক ক্রুসেড
আমিরুল মুমিনিন উমর ইবনুল খত্তাব রাদি. এর শাসনামলে বাইতুল মুকাদ্দাস মুসলমানদের হাতে আসে। সাড়ে চারশ বছর অধিকৃত থাকার পর সর্বপ্রথম ৪৯৬ হিজরি/১০৯৯ ঈসাব্দে বাইতুল মুকাদ্দাস মুসলমানদের হাতছাড়া হয়। যদিও সেদিন ৭০ হাজার মুসলমান বুকের তাজা রক্ত ঢেলে প্রতিরোধের চেষ্টা করেছিলেন।
তবে ইতিহাসের পাতা ঘুরতে খুব বেশি সময় লাগেনি। মাত্র ২৬ বছরের মাথায় শুরু হয় উদ্ধার অভিযান। উম্মাহর তিন সেনাপতির অক্লান্ত পরিশ্রম আর ৬৫ বছরের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম শেষে সুলতান সালাহউদ্দীন আইউবির হাতে ৫৮৩ হিজরি/১১৮৭ ঈসাব্দে শত্রুমুক্ত হয় আমাদের প্রথম কেবলা বাইতুল মুকাদ্দাস। ইতিহাসের এই অন্ধকারতম সময়ে এই পূণ্যভূমি আমাদের হাতছাড়া ছিল মাত্র ৮৮ বছর।
৬২৪ হিজরিতে বাইতুল মুকাদ্দাস দ্বিতীয়বারের মত মুসলমানদের হাতছাড়া হয়; কিন্তু এর মাত্র ১৮ বছরের মাথায় ৬৪২ হিজরি/১২৪৪ ঈসাব্দে আল মালিকুস সালেহের নেতৃত্বে খাওয়ারজিমি সৈন্যদের বীরত্বগাথায় আইউবির আমানত ‘বাইতুল মুকাদ্দাস’ আমাদের হাতে ফিরে আসে।
সর্বশেষ ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরাইল যুদ্ধের পর বাইতুল মুকাদ্দাস মুসলমানদের হাতছাড়া হয়। অর্থাৎ ৭২৩ বছর অধিকৃত রাখার পর আজ থেকে ৫০ বছর আগে প্রথম কেবলা মসজিদুল আকসা আমাদের হাতছাড়া হয়।
বিগত দু’হাজার বছরের ইতিহাস এ কথার প্রমাণ বহন করে যে, বাইতুল মুকাদ্দাস যুগে যুগে ইতিহাসের বীর জাতির অধিকৃত ছিল। মুসলমান, খ্রিস্টান ও ইয়াহুদি- এই তিন জাতির জনগোষ্ঠীর কাছে সম্মানিত হওয়ার কারণে সবসময় বিশ্বজয়ী শক্তি বাইতুল মুকাদ্দাস অধিকৃত রাখতে পেরেছে।
বিগত দেড় হাজার বছরের ইতিহাস এই অমোঘ সত্যও স্বীকার করে যে, তিন মুদ্দতে (৮৮+১৮+৫০) মাত্র ১৫৬ বছর বাইতুল মুকাদ্দাস মুসলমানদের হাতছাড়া ছিল। বাকি ১২৫০ বছরেরও অধিককাল মুসলমানদের হাতেই এই পবিত্র ভূমির সম্মান সুরক্ষিত ছিল।
যদিও বাইতুল মুকাদ্দাস দখলের মাধ্যমে খ্রিস্টান-ইয়াহুদি সম্মিলিত শক্তির সামরিক ক্রুসেড আপাতত পরিসমাপ্ত হয়েছে; কিন্তু ভবিষ্যতে যেন কোনো দিন মুসলিম জাতি এই পবিত্র ভূমি উদ্ধার করতে না পারে, এজন্যে বর্তমান সময়ে তারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে অব্যাহত রেখেছে বুদ্ধিবৃত্তিক ক্রুসেড। ইতিহাস সাক্ষী, এই বুদ্ধিবৃত্তিক ক্রুসেডের ভয়াবহতা সামরিক ক্রুসেডের চেয়ে কোনো অংশেই কম নয়। তাদের সেই বুদ্ধিবৃত্তিক ক্রুসেড কী? কীভাবে তারা তাদের সেই চিন্তাযুদ্ধ সাফল্যের সঙ্গে চালিয়ে যাচ্ছে? الاستشراق، الاستعمار، العولمة، التنصير، العلمانية، التغريب [প্রাচ্যতত্ত¡, সাম্রাজ্যবাদ, বিশ্বায়ন, নাস্তিকতা, সেক্যুলারিজম, মর্ডানিজম] কীভাবে সেই বুদ্ধিবৃত্তিক ক্রুসেডের পরিবাহক হয়ে আমাদের প্রতিরোধশক্তি নিঃশেষ করেছে, সে কথাই বক্ষ্যমাণ গ্রন্থে উঠে এসেছে। ছদ্মবেশী ক্রুসেডারদের হাতে আমাদের জাতিসত্ত্বার নীরব হত্যার কথাচিত্র ‘বুদ্ধিবৃত্তিক ক্রুসেড’।
- নাম : বুদ্ধিবৃত্তিক ক্রুসেড
- অনুবাদক: ডা. আবদুল্লাহ আল ফারুক
- প্রকাশনী: : শুদ্ধি প্রকাশনী
- ভাষা : bangla
- বান্ডিং : hard cover
- পৃষ্ঠা সংখ্যা : 174
- প্রথম প্রকাশ: February, 2018
-
ক্যাটাগরি :